বৃটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি এদেশে বানিজ্যিক উদ্দেশ্যে আসে এবং কালক্রমে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা গ্রহন করে। ঔপনিবেশিক আমলে বিভাগ, জেলা ও থানাকে প্রশাসনিক ইউনিট হিসেবে সৃষ্টি করে। ভারতের গভর্ণর জেনারেল ওয়ারেন হেস্টিংস ১৭৭২ খ্রিষ্টাব্দে বংগ প্রদেশকে ২৩ টি জেলায় বিভক্ত করেন। প্রতি জেলায় রাজস্ব আদায় সংক্রান্ত দেওয়ানী মামলার শুনানী গ্রহনের জন্য একজন কালেক্টর নিয়োগ করেন।বৃটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির বোর্ড অব ডাইরেক্টরস ১৭৮৬ খ্রিস্টব্দে দেশীয় দেওয়ানের পদ বিলোপ করে কালেক্টরকে স্থানীয় ইউনিট করার সিন্ধান্ত গ্রহন করে এবং রাজস্ব প্রশাসন, সিভিল জজ ও ম্যাজিষ্ট্রেট ইত্যাকার অফিসকে কালেক্টরের অফিসের সাথে সম্পক্ত করার জন্য সুপ্রীম কাউন্সিলকে নির্দেশ প্রদান করে। উক্ত আদেশের প্রেক্ষিতে, মেকপারসন (Macpherson)১৭৮৬ খ্রিস্টাব্দে বংগ প্রদেশকে ৩৬ টি জেলায় বিভক্ত করে প্রত্যেক জেলায় একজন কালেক্টর নিয়োগ করেন। ১৭৯৩ খ্রিস্টব্দে কালেক্টরকে আইন-শৃংখলা রক্ষার দায়িত্ব, ম্যাজিষ্ট্রেসী ক্ষমতা প্রদান ও রাজস্ব আদায়ের সার্বিক দায়িত্ব দেয়া হয়। ১৮৭২ খ্রিস্টব্দে স্যার জর্জ ক্যামবেল (Campbell), জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট এর ক্ষমতাকে আরও সূদৃঢ করেন। এ সময় জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট ও কালেক্টরকে জেলা পর্যায়ে অন্যান্য বিভাগীয় অফিসের কাজকর্মের তত্ত্বাবধানের ক্ষমতা প্রদান করার মাধ্যমে তাকে জেলা পর্যায়ে প্রধান নির্বাহী ও প্রশাসক হিসেবে গড়ে তোলা হয়। ১৯৩০ খ্রিস্টাব্দে সাইমন কমিশন মত প্রকাশ করে যে, কালেক্টর জেলা প্রশাসকের প্রধান হিসেবে পুলিশ সুপার ও অন্যান্য কারিগরি বিভাগের প্রধানগনের ওপর থাকবেন। ১৯৪৭ খ্রিস্টব্দে পাকিস্থান সৃষ্টি হবার পর থেকে সমগ্র দেশকে বিভাগ, জেলা ও মহকুমা এবং থানা পর্যায়ে প্রশাসনিক ইউনিটে রূপান্তর করা হয়। এ সময় জেলা প্রশাসক শক্তিশালী ইউনিট হিসেবে আত্নপ্রকাশ করে। কালেক্টর /জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট /ডেপুটি কমিশনার জেলার প্রধান নির্বাহী হিসেবে জেলায় তদারকী ও সমন্বয়মূলক ভূমিকা পালন করে আসছেন। স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশ বিভাগ, জেলা, মহকুমা ও থানা প্রশাসনিক ইউনিট হিসেবে বহাল থাকে এবং জেলা প্রশাসক শক্তিশালী ইউনিট হিসেবে আত্নপ্রকাশ করে। জেলা প্রশাসনের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট /কালেক্টর/ জেলা প্রশাসক জেলা রাজস্ব আদায়, আইন শৃংখলার সার্বিক দায়িত্ব ও ফৌজদারী বিচার প্রশাসনসহ আন্তবিভাগীয় কাজের সমন্বয় সাধন করেন। বর্তমানে জেলা প্রশাসক সাধারন, রাজস্ব প্রশাসন, ফৌজদারী বিচার প্রশাসন, আইন-শৃংখলা রক্ষা, উন্নয়নপ্রশাসন ছাড়াও জেলা পর্যায়ের আন্তঃবিভাগীয় কাজের সমন্বয় সাধনের মত গুরুত্বপূর্ন দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে সমাদৃত। চারস্তর বিশিষ্ট্য প্রশাসনিক কাঠামোতে উপজেলা একটি শক্তিশালী ইউনিট।
বর্তমানে উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর কার্যালয়, মধুপুর,টাঙ্গাইল জনপ্রশাসন মন্ত্রনালয়ের অধিনে জেলা প্রশাসক এর নিয়ন্ত্রনাধীন একটি অফিস। জেলা প্রশাসক জেলার মধ্যে এ অফিসের নিয়ন্ত্রন করেন। সরকারি কর্ম কমিশনের মাধ্যমে নিয়োগ প্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ দপ্তরের প্রধান। মাঠ প্রশাসনে উপজেলা পর্যায়ে একটি প্রধান নির্বাহী অফিস। মাঠ প্রশাসনের যাবতীয় প্রশাসনিক কার্যক্রম, আইনশৃংখলা ও ম্যাজিস্ট্রেসি দায়িত্ব, পাবলিক পরীক্ষা গ্রহন, উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন, মনিটরিং ও তদারক, হাট-বাজার ইজারা প্রদান, ত্রাণ কার্যক্রম বাস্তবায়ন, ভূমি প্রশাসন বিষয়ক কার্যক্রম বাস্তবায়ন ও তদারক করা এ কার্যালয়ের কার্যক্রমের অর্ন্তভুক্ত। উপজেলা পরিষদের সাচিবিক দায়িত্ব সহ উপজেলা পর্যায়ের সকল বিভাগের কার্যক্রমের সমন্বয় সাধন ও সরকার ঘোষিত বিভিন্ন কর্মসূচী বাস্তবায়ন করেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাঠ পর্যায়ে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিভূ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
Planning and Implementation: Cabinet Division, A2I, BCC, DoICT and BASIS